Placeholder
জননী জন্মভূমি Original price was: 500৳.Current price is: 430৳.
Back to products
দিবানিশি Original price was: 300৳.Current price is: 258৳.

দ্য আনটোল্ড স্টোরি অব ইন্ডিয়ান’স পার্টিশন

By:

Format

Hardcover

Country

বাংলাদেশ

Original price was: 400৳.Current price is: 344৳.

অনুবাদকের কথা ‘ফ্যাক্টস আর ফ্যাক্টস : দি আনটোল্ড স্টোরি অব ইন্ডিয়া’স পার্টিশন’ বইটির মূল প্রণেতা আব্দুল ওয়ালি খান। জাতিতে তিনি ছিলেন পাঠান। বর্তমান পাকিস্তানের সীমান্ত প্রদেশ। ওয়ালি খানের মাতৃভাষা ছিল পুশত। মূল বইটি তিনি পুশত ভাষায় লিখেছেন। এই বইয়ের মুখবন্ধে তিনি বইটি লেখার প্রেক্ষাপট বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেছেন। সুতরাং নতুন করে আমরা আর কোনো মুখবন্ধ লিখব না। তবে বইটি অনুবাদ করার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে, বইটির বিষয়বস্তুর উপর আমরা কিছু আলোকপাত করার চেষ্টা করব। এই বইটির খোঁজ পেয়েছিলাম আমি ১৯৮৭ সালে। বইটি তখন পড়েছিলাম। এই বইয়ের বিষয়বস্তু যেহেতু ‘দেশ ভাগ’ তাই প্রথম থেকেই আমার মনের মধ্যে এক ধরনের আগ্রহ জন্মে ছিল যে, বইটি বাংলায় অনুবাদ করা যায় কিনা। কারণ শৈশব থেকেই আমার মনকে নাড়া দিত দেশ ভাগের করুণ ট্র্যাজেডি। তাই দেশ ভাগের প্রকৃত ইতিহাস জানার অদম্য আগ্রহ ছিল আমার প্রিয় বিষয়। এই বিভক্তি আমি কখনই মেনে নিতে পারি না। এখনও আমার মনে হয় কংগ্রেস এবং গান্ধীজী ইচ্ছা করলে দেশ ভাগ প্রতিহত করতে পারতেন। বইটি অনুবাদ করতে গিয়ে আমার তাই মনে হয়েছে। আমার বাবার কাছে আমি কলকাতার দাঙ্গার গল্প শুনতাম। আসলে আমাদের পূর্বপুরুষদের জীবন বিকশিত হয়েছে এই কলকাতা শহরে। ব্যবসা-বাণিজ্য, লেখাপড়ার সূত্রে এই শহরের সাথেই গড়ে ওঠে আমাদের আত্মীয়তার বন্ধন। দেশ ভাগের ফলে আমাদের এই প্রিয় শহর চির দিনের জন্য পর হয়ে গেল। দেশ ভাগ নিয়ে প্রচুর বই লেখা হয়েছে। তার অধিকাংশ বই লেখা হয়েছে ইংরেজি ভাষায়। বাংলা ভাষায় দেশ ভাগ নিয়ে খুব বেশি বই লেখা সম্ভব হয়নি। কারণ দেশ ভাগের মূল দলিলগুলো ব্রিটিশ হেফাজতে রক্ষিত ছিল। তার হদিস পাওয়া ভারতীয়দের পক্ষে সম্ভব ছিল না। দেশ ভাগের ইতিহাস লিখতে হলে ব্রিটিশদের মনোভাব জানা খুব জরুরি ছিল। এই বইটি সেই অভাব অনেকটা পূরণ করেছে। দেশ ভাগের দৃশ্যমান পরিস্থিতি দেখে মনে হতে পারে, এটা ছিল লীগ ও কংগ্রেসের দ্বন্দ্ব। হিন্দু ও মুসলিমদের বিরোধ। এইসব বিরোধ ও দ্বন্দ্বের ফলেই দেশ বিভক্ত হয়েছে। কিন্তু বাস্তব অবস্থা ছিল সম্পূর্ণ অন্য রকম। এই বইটি অনুবাদ করতে গিয়ে সেইসব ‘অন্য রকম’ কলঙ্কজনক ইতিহাস আমাদের চোখের সামনে ভেসে উঠেছে। যা সভ্য সমাজ কখনই মেনে নিতে পারে না। প্রকৃত বাস্তবতা হলো, দেশ ভাগ এবং হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গায় তৎকালীন ব্রিটিশ প্রশাসনের কালো হাত ছিল। ব্রিটিশ চেয়েছিল বলে দেশ ভাগ হয়েছে। এখন মনে হয়, ক্রিপস মিশন এবং ক্যাবিনেট মিশন পরিকল্পনা এই সবই ছিল লোক দেখানো। লীগ-কংগ্রেস ছিল ব্রিটিশের হাতের পুতুল। দেশ ভাগের বস্তুগত কারণ থাকলেও ব্রিটিশ না চাইলে দেশ ভাগ হতো না। দেশ ভাগের জন্য তারাই দায়ী। তবে একথা ঠিক, কংগ্রেসের নেতাদের নির্বুদ্ধিতার কারণে দেশ ভাগের খেসারত দিতে হয়েছে অনেক বেশি। এই সব ব্যর্থ নেতাদের ভুলের কারণে দেশ ভাগের মতো বিয়োগান্ত ঘটনা প্রতিহত করা সম্ভব হয়নি। একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে আজও মৌলানা আজাদের বিহারের রামগড়ে কংগ্রেসের অধিবেশনে সভাপতির সেই ভাষণের কথার প্রতিধ্বনি শোনা যায়। দেশ ভাগের ফলে অসংখ্য নিরীহ মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছে। চৌদ্দ-পুরুষের ভিটে ছেড়ে উদ্বাস্তু হতে হয়েছে অসংখ্য মানুষকে। হিন্দু-মুসলিমের বিরোধ স্থায়ী রূপ লাভ করেছে। এই অবিশ্বাস ও সন্দেহ এখনও বিদ্যমান। সেই কারণে অতীতের দেশ ভাগ এখনও আমাদের চিন্তাকে আচ্ছন্ন করে রেখেছে। তারপরও বলতে হয়, ইতিহাসের আদি কাল থেকেই ভারতবর্ষের গ্রামাঞ্চলের সাধারণ মানুষ সম্প্রীতির সাথে বসবাস করেছেন। ইতিহাস তার সাক্ষী। ছোটখাটো কিছু বিরোধ থাকলেও কেউ কাউকে কখনো শত্রু ভাবেনি। ব্রিটিশ গোড়া থেকেই এই সম্প্রীতির পরিবেশ নষ্ট করার জন্য তৎপর ছিল। মুসলিম লীগ সৃষ্টির মধ্য দিয়ে ব্রিটিশ তার রাজনৈতিক অশুভ উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করেছে। ভারতবর্ষের মুসলিমরা আলাদা জাতি। তাদের জন্য আলাদা ভূখণ্ড দরকার। এই মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তত্ত্ব ব্রিটিশ লীগের মাধ্যমে প্রচার করেছিল। কংগ্রেস এই মিথ্যা প্রচারের বিরুদ্ধে জনমত সংগঠিত করতে পারেনি। তাদের ব্যর্থতার কারণেই ভারতের মুসলিম সম্প্রদায় লীগের পতাকাতলে শামিল হয়েছিল। লীগের প্রচারণায় বিভ্রান্ত হয়ে দ্বিধাগ্রস্ত ভারতীয় মুসলিমরা জিন্নাকে নেতা মেনেছেন এবং তার পেছনে ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন। ভাইসরয় লিনলিথগো যে জিন্নাকে বলেছিলেন ‘কংগ্রেসের চেয়ে বেশি কংগ্রেস।’ গোখলে ও সরোজিনী নাইডু যাকে ভারতের হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের দূত বা প্রতীক বলেছিলেন। কি করে এই উদার মানুষটি শেষ পর্যন্ত ‘পোকায় খাওয়া’ পাকিস্তান নিয়ে সন্তুষ্ট থাকলেন? জিন্না ছিলেন পাষাণ হৃদয়ের মানুষ। তার আধিপত্যবাদী মানসিকতার কাছে সবাই পরাজিত হয়েছেন। কংগ্রেসের ভুলের সুযোগ গ্রহণ করেছেন তিনি। জিন্নার কূট-কৌশলের কাছে সবাই হেরে গিয়েছেন। এটা সম্ভব হয়েছে, ব্রিটিশ প্রশাসকরা ছিলেন জিন্নার পক্ষে। বর্তমান গ্রন্থটিতে সেই সব তথ্য-উপাত্ত দলিল সন্নিবেশিত হয়েছে যা এতদিন ব্রিটিশ সংরক্ষণাগারে রক্ষিত ছিল। এখন সেই দলিলগুলো অবমুক্ত করা হয়েছে। সীমান্ত প্রদেশের পাঠানদের মধ্যে টাকা ছড়িয়ে কীভাবে তাদেরকে লীগের সমর্থক বানানো হয়েছে তার বিস্তারিত বিবরণ এখানে তুলে ধরা হয়েছে। মোল্লারা টাকা খেয়ে কংগ্রেস এবং খুদাই-খিদমতগারের বিরুদ্ধে কীভাবে ফতোয়া জারি করেছেন তার বিবরণও তুলে ধরা হয়েছে এই গ্রন্থে। যা এতদিন অজানা ছিল। ভাইসরয় এবং ভারত সচিবের পত্রালাপের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি, কীভাবে পীর ও মোল্লারা টাকার বিনিময়ে ইসলাম এবং নিজেদেরকে বিক্রি করে দিয়েছেন। ইস্কান্দার মীর্জার আত্মজীবনী থেকে বহু তথ্য এই গ্রন্থে সন্নিবেশিত হয়েছে। সীমান্ত প্রদেশে লীগের কোনো অস্তিত্ব ছিল না। সেখানে লীগের প্রভাব বৃদ্ধি করার জন্য ব্রিটিশরা উপজাতি অঞ্চলের এজেন্সিগুলোর নেতাদের ব্যবহার করেছেন টাকার বিনিময়ে। এইভাবে কংগ্রেস এবং স্থানীয় হিন্দু ও শিখদের বিরুদ্ধে লীগ দ্বারা সাম্প্রদায়িক প্রচারণা চালিয়ে দাঙ্গার পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে। এই সব কাহিনি এর আগেও আমরা কম-বেশি জেনেছি। কিন্তু বর্তমান গ্রন্থটি বহু তথ্য ও দলিল উপস্থাপন করে দেশ ভাগের প্রকৃত কারণ, হিন্দু-মুসলিম সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার বিবরণ তুলে ধরেছেন। তরুণ প্রজন্ম এবং আধুনিক ইতিহাস গবেষকদের কাছে এই গ্রন্থটি একটি অমূল্য দলিল হিসেবে কাজ করবে। ভারত একটি বৈচিত্র্যময় বহুত্ববাদী সংস্কৃতির দেশ। এখানে বহু ভাষা, ধর্ম ও সংস্কৃতির মানুষের বসবাস। বহু বিদেশি শাসক এখানে এসেছেন এবং এই দেশ শাসন করেছেন। সর্বশেষ এখানে ইংল্যান্ড থেকে এসেছেন ব্রিটিশরা। তার আগে এই দেশের শাসক ছিলেন মুসলিমরা। তারা প্রায় সহস্রাব্দ বছর এখানে রাজত্ব করেছেন দাপটের সাথে কোনো ঝামেলা ছাড়াই। সংখ্যায় তারা হিন্দুদের তুলনায় কম ছিলেন। কিন্তু শাসক হিসেবে তারাই ছিলেন বিশাল ভারতবর্ষের দণ্ডমুণ্ড। কিন্তু দুঃজনক হলেও সত্য যে, ভারতবর্ষের কোনো শাসক ধর্মের ভিত্তিতে ভারত ভাগের দাবি উত্থাপন করেননি। এই অপরাধমূলক কাজটি করেছেন শুধু ভারতীয় মুসলিমরা। অনেকেই বলেন, ইসলাম ভারতে এসেছিল সিংহাসন জেতার লোভে। সম্পদশালী উর্বর সমৃদ্ধ দেশকে শাসন ও লুণ্ঠন করার আশায়। আবার তারাই শাসন করে এই অখণ্ড অবিভাজ্য দেশকে মানচিত্রে লাইন টেনে মাউন্টব্যাটেনের ভাষায় ‘অস্ত্রোপচার’ করে ভারতের পশ্চিমাঞ্চলের এবং পূর্বের কিছু অংশ নিয়ে পাকিস্তান নামের একটি কৃত্রিম দেশ তৈরি করে অর্থাৎ যেদিক থেকে মুসলিমদের ভারতবর্ষে আগমন যেন লুণ্ঠন শেষে আবার সেই দিকে নির্গমন। দেশ ভাগে ব্রিটিশ যড়যন্ত্র ছিল। সেই যড়যন্ত্রের বিশদ বিবরণ এই বইয়ে পাওয়া যায়। বহু দিন থেকে আমার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল বইটি বাংলায় অনুবাদ করা যায় কীভাবে। করোনা ভাইরাস যখন দেশব্যাপী মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ে তখন ঘরবন্দি হয়ে গেলাম। বিস্তর সময় হাতে। একদিন সাহস করে অনুবাদের কাজে লেগে গেলাম। তারপর নানান চড়াই-উতরাই পেরিয়ে বছরব্যাপী একটানা লেগে থেকে অনুবাদের কাজটি শেষ করে ফেললাম। মূল বইটি পুশত ভাষায় লেখা। তারপর উর্দু ও ইংরেজি ভাষায় বইটির অনুবাদ করা হয়েছে। যা পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে। এখন বইটি বাংলায় অনুবাদ করা হলো। অনুবাদের ভালো-মন্দ বিচার করবেন পাঠকরা। তবে অনুবাদকের অতৃপ্তি থেকেই যায়। মূল বইয়ের বাক্যের অন্তর্গত ভাবটির তাৎপর্য বাংলা অনুবাদে প্রকাশ করার চেষ্টা করা হয়েছে। তারপরও ত্রুটি-বিচ্যুতির সমস্ত দায় আমার নিজের। অন্বেষা প্রকাশনের কর্ণধর মো. শাহাদাত হোসেন ভাই পাণ্ডলিপিটি দেখে প্রকাশের আগ্রহ দেখিয়ে একটি ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেছেন। তাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আদিত, অর্পণ দুই সহোদর আর যারা বইটি প্রকাশের সাথে জড়িত থেকেছেন তাদের প্রতি রইল আমার অশেষ কৃতজ্ঞতা। জাহিদ হোসেন মুক্তিপাড়া, চুয়াডাঙ্গা ১৩.০৩.২০২১
Writer

Translator

Publisher

ISBN

9789849624349

Genre

Pages

208

Published

1st Publisied, 2022

Language

বাংলা

Country

বাংলাদেশ

Format

Hardcover